শিরোনাম
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের আরও একটি সাফল্যঃ
বিস্তারিত
ভালোই চলছিল হেলাল গাজীর মেঝ ছেলে আবু বক্কর (১৯) এর। সরকারী আলেকান্দা কলেজ থেকে সদ্য এইচএসসি পাশ করে বেশ কয়েক জায়গায় চাকরির পরীক্ষায়ও বসেছিল সে। প্রযুক্তিজ্ঞানেও বেশ দক্ষ আবু বক্কর তার অবসর সময়টা প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে অন্ধকার জগতে জড়িয়ে পড়াতেই ব্যবহার করল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে "বরিশাল নথুল্লাবাদ আবাসিক হোটেল বরিশাল" নামক একটি পেজ চালাতো সে। পেজের মূল কাজ ছিল উঠতি বয়সী তরুণ-তরুনীদের বিভিন্ন অনৈতিক কাজে
প্রলুব্ধ করা। ওনার কাজ করার ধরণও ছিল অনেকটা ব্যতিক্রমধর্মী। প্রথমে টার্গেট ফিক্স করে বিভিন্ন নারীর ছবি দেখিয়ে টাকার বিনিময়ে অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতিয়ে নিত টাকা। কখনও অনৈতিক কর্মকান্ডের ছবি বা ভিডিও ধারণ করে টার্গেটকে ব্লাকমেইলিং এর জালে জড়িয়ে ফেলত।
তার সবথেকে সহজ শিকার ছিল তরুনীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে যে কোন নারীর ছবি নিয়ে কুৎসিত ক্যাপশন দিয়ে তা ছড়িয়ে দিত ইন্টারনেটের অসীম জগতে ফলে রাতারাতি বিপর্যয় নেমে আসত তার পারিবারিক আর সামাজিক জীবনে।
যে কোন মেয়ের জীবনকে বিষিয়ে তুলতে আবু বক্করের জুড়ি মেলা ভার। তিনি এরকম মোট ১৩ টি গ্রুপের মালিক যাতে মোটামুটি ৭০-৮০ হাজারের মত মেম্বার আছে যারাও কিন্তু পরোক্ষভাবে ওনার সহযোগী অপরাধিই বলা চলে।
যা হোক, আবু বক্করের এই সুসময়ে বাদ সাধেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিটের একটি চৌকষ দল। মাননীয় পুলিশ কমিশনার জনাব জিহাদুল কবির বিপিএম,পিপিএম এর দিক নির্দেশনায় প্রায় একমাস উক্ত গ্রুপসমূহের কার্যাবলি পুঙ্ক্ষানুপুঙ্ক্ষভাবে নজরাদারির আওতায় এনে অবশেষে ওনাকে চৌদ্দশিকের আওতায় আনা হয়।
সুসময়ে আবু বক্করের ফ্যান-ফলোয়ারের কোন কমতি ছিল না। কিন্তু এখন-
"অসময়ে হায় হায় কেউ কারাে নয়"
তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে ইন্টারনেটের মায়া উপেক্ষা করা কিন্তু একেবারেই অসাধ্য। দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেট ছাড়া আজ অচলপ্রায়। কিন্তু এই তথ্যপ্রযুক্তির অবাধপ্রবাহ আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাতে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন রূপে আবির্ভূত হয়ে আপনারই সর্বনাশ না করে সে দায়িত্ব কিন্তু আপনাকেই নিতে হবে।
আর জ্ঞাত-অজ্ঞাতসারে যদি অপরাধে জড়িয়েই পড়েন তবে চৌদ্দশিকের জন্য দিনগোণাই ভালো হবে আপনার জন্য। কারণ বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অনেকজোড়া চোখ ঠিক আপনার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছে।
মনে রাখবেন, আপনার পাশাপাশি আপনার সাইবার স্পেসের নিরাপত্তায়ও বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ সদাজাগ্রত।